উত্তম কুমার পাল হিমেল, নবীগঞ্জ : হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় দুই সাংবাদিকের বিরোধকে কেন্দ্র করে পৌর এলাকায় সংঘর্ষের ৩ দিন পর বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) থেকে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
১৪৪ ধারা প্রত্যাহারের পর জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। খুলতে শুরু করেছে দোকানপাট। যানবাহন চলাচলও প্রায় স্বাভাবিক হয়েছে; কিন্তু এ ঘটনায় পূর্ব তিমিরপুর, পশ্চিম তিমির পুর, চরগাঁও, আনমনু, রাজাবাদ, নোয়াপাড়া ও পিরিজপুর এলাকা পুরুষ শূন্য। কারণ যৌথবাহিনীর চিরুনি অভিযান চলছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় ৯ জুলাই রাতে পুলিশ বাদি হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৬ সাংবাদিক সহ ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪-৫ হাজার জনের নামে মামলা দায়ের করেছে। নবীগঞ্জ থানার এসআই রিপন দাশ বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন (মামলা (নং ১০, তারিখ ০৯/০৭/২০২৫ ইং)।
অপরদিকে এ ঘটনার নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ৯ জুলাই বিকেলে শহরের বাইরে আউশকান্দি বাজার হাফিজিয়া সিনিয়র দাখিল মাদরাসায় একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় । এতে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট শালিস কমিটি ও উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তে নবীগঞ্জের চলমান বিবাদের মীমাংসার অগ্রগতি সাধনে ৫টি বিষয় যেমন, সালিশ বোর্ড গঠন, উভয় পক্ষের সম্মতি গ্রহণ, প্রশাসনের সাথে সমন্বয় সাধন, নিহত ফারুক মিয়ার জন্য শোক প্রকাশ, অহেতুক নিরীহ জনসাধারণকে প্রশাসনিক হয়রানি না করা ও সংঘর্ষে জড়িত উভয় পক্ষকে শান্ত রাখাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, স্থানীয় দুই সাংবাদিক সেলিম তালুকদার ও আশাহিদ আলী আশার মধ্যে একে অপরকে কটুক্তি করা নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। এ বিরোধ গড়ায় কয়েক এলাকবাসীর সংঘর্ষে। প্রথমে সেলিম তালুকদারের পক্ষে পূর্ব তিমিরপুর ও আশাহীদ আলী আশার পক্ষে আনমনু এলাকাবাসী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পরে তাদের পক্ষ নিয়ে আরও কয়েক এলাকার মানুষ সংঘর্ষে জড়ায়।
গত ৭ জুলাই নবীগঞ্জ বাজারে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে পূর্ব তিমিরপুর এলাকার এম্বুলেন্স চালক ফারুক মিয়া (৪২) মারা যান। আহত হন শতাধিক মানুষ। এ সময় নবীগঞ্জ বাজারের শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যানবাহন ও বেসরকারি হাসপাতালে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো রুহুল আমীন পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেন।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মো কামরুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে। এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ৭ জনকে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল অব্যাহত রয়েছে।