মৌলভীবাজারে আ লীগকে নিয়ে এনসিপির কমিটি || যুগ্ম সচিবকে অবাঞ্চিত ঘোষণা

No Image Available
  • আপডেট টাইম : June 21 2025, 08:29
  • 37 বার পঠিত
মৌলভীবাজারে আ লীগকে নিয়ে এনসিপির কমিটি || যুগ্ম সচিবকে অবাঞ্চিত ঘোষণা

বিশেষ প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারে আওয়ামী লীগকে নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির জেলা সমন্বয় কমিটি গঠনের প্রতিবাদে দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব প্রীতম দাসকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়েছে।
শুক্রবার (২০ জুন) ৩১ সদস্য বিশিষ্ট এই সমন্বয় কমিটি অনুমোদন দেয় এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটি; কিন্তু তা প্রকাশিত হওয়ামাত্র মৌলভীবাজারের সাধারণ ছাত্র-জনতার মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। প্রতিবাদের ঝড় উঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। একই সঙ্গে জেলা জুড়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
রাত ১০টায় মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে জেলা সমন্বয় কমিটি প্রত্যাখান ও আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের দায়ে এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব প্রীতম দাসকে জেলায় অবাঞ্চিত ঘোষণা করে সাধারণ ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে।
এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে প্রীতম দাসের বিরুদ্ধে এনসিপির আড়ালে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন ও জুলাই বিপ্লবের চেতনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ তুলে নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
তারা বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে সম্পৃক্ত যোদ্ধা বা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কোনো আলাপ-আলোচনা ছাড়াই রাতের আঁধারে বিতর্কিতদের নিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সহযোগিতা করেছেন প্রীতম দাস। এ বিষয়ে ছাত্ররা প্রতিবাদ করলে তিনি তাদেরকে মামলা-হামলার হুমকি দেন।
ছাত্র নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘এই কমিটিকে গ্রহণ করার সুযোগ নেই। জেলা সমন্বয় কমিটির তালিকা দেখে আমরা অবাক হই। এতে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতার নাম রয়েছে। কমিটির বেশিরভাগই আমাদের অপরিচিত, যাদেরকে বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে আমরা দেখিওনি। এ বিষয়টি কেন্দ্রীয় কমিটিকে অবগত করা হয়েছে।’
তারা এই কমিটিকে ‘পকেট কমিটি’ উল্লেখ করে দ্রুত তা বাতিল করে পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা সমন্বয় কমিটিতে প্রধান সমন্বয়কারী করা হয়েছে ফার্মেসি ব্যবসায়ী খালেদ হাসানকে। যুগ্ম সমন্বয়কারী রাখা হয়েছে নয় জনকে। তারা হলেন, ফাহাদ আলম, এহসান জাকারিয়া, মো. ইকবাল হোসেন, রুমন কবির, শামায়েল রহমান, নিলয় রশিদ, সানাউল ইসলাম সুয়েজ, শাহ মিসবাহ ও সৌমিত্র দেব। এছাড়া অ্যাডভোকেট কৌশিক দে, জাহাঙ্গীর আলম, ভীমপল সিনহা, রাসেল থিংগুজাম ও বৈশিষ্ট্য গোয়ালা সহ ২১ জনকে সদস্য করা হয়েছে।
এই কমিটি আগামী ৩ মাস অথবা নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পূর্ব পর্যন্ত জেলা পর্যায়ে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
গত ১৮ জুন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের যৌথ স্বাক্ষরে এই কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
কমিটির প্রথম যুগ্ম সমন্বয়কারী ফাহাদ আলম ও সদস্য বৈশিষ্ট্য গোয়ালার ছাত্রলীগ-যুবলীগের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততার পরিচয় তুলে ধরেছেন ছাত্ররা। তারা আওয়ামী লীগের নির্বাচন, বিভিন্ন মিছিল ও সভায় তাদের অংশগ্রহণের ছবি ও ভিডিও তুলে ধরে এনসিপির জেলা সমন্বয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
এদিকে প্রধান সমন্বয়কারী খালেদ হাসান নিজেকে একজন ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে জানান, কমিটির বেশির ভাগ সদস্যই ব্যবসায়ী ও ব্যাংক-বীমা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি। আওয়ামী লীগ ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের বিষয়ে তিনি নিজেও অবগত নন এবং কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তেই তাদের নাম অনুমোদন করা হয়েছে। তবে জেলার রাজনীতিতে এনসিপির অবস্থান আরও সুদৃঢ় করতে সকলের সহযোগিতা নিয়ে তিনি কাজ করতে চান।

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর