জকিগঞ্জ প্রতিনিধি : সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায় ৭১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলমান ওয়াশব্লক নির্মাণে নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পিইডিপি-৪ এর আওতায় উপজেলার ৭১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিদ্যালয় ভবন অনুযায়ী একতলা বা দোতলা ওয়াশ ব্লক নির্মাণ শুরু হয়; কিন্তু নির্মাণ কাজে ত্রুটি, নিম্নমানের স্যানেটারি সামগ্রী ব্যবহার ও অদক্ষ মিস্ত্রি দিয়ে যেনতেন ভাবে কাজ করানোর অভিযোগ করেছেন হাড়িকান্দি, হকিব আলী চৌধুরী, রতনগঞ্জ, গঙ্গাজল (ক), গঙ্গাজল (খ), মুলিকান্দি, শিমুলতলা গুয়াবাড়ী, ইলাবাজ, ফুলতলী, চৌধুরী বাজার, তিরাশী, কোনাগ্রাম ও সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও অভিভাবকরা।
হাড়িকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভূমিদাতা মোর্শেদ লস্কর জানান, এ বিদ্যালয়ে ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে দুইতলা বিশিষ্ট ওয়াশব্লকের কাজ চলমান। সরেজমিনে নিম্নমানের ইট, কংক্রিট ও বালু ব্যবহার, কাজের সিডিউল ভঙ্গ করে সিমেন্টের ভাগ ও রড কম দেওয়া এবং অদক্ষ মিস্ত্রি দিয়ে যেনতেন ভাবে কাজ করানোর প্রমাণ পাওয়ায় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শনিবার (২১ জুন/৭ আষাঢ়) উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে কর্তৃপক্ষ কাজ বন্ধ রাখে।
প্রধান শিক্ষক মাসুদ আলম জানান, ভিত্তিপ্রস্তর থেকেই অনিয়মের সূত্রপাত। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন এলাকাবাসী সহ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কথায় পাত্তা না দিয়ে অনিয়ম করে যাচ্ছে।
হকিব আলী চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মাসউদ জানান, একাডেমিক ভবনের সাথে ওয়াশব্লকের ছাদের সংযোগস্থলে পানি পড়ে। ওয়াশব্লকের সীমানা নির্ধারণে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কথা রাখেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। বিদ্যালয় বন্ধকালীন সময় অথবা রাতে সকলের অগোচরে কাজ করা হয়।
এই ৭১টি বিদ্যালয়ের কাজ পেয়েছে ৩টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে বাহার এন্টারপ্রাইজ থেকে ১৮টি বিদ্যালয় সাব লিজ নিয়ে কাজ করছেন সেলিম উল্লাহ নামক এক ব্যক্তি। বাহার এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বাহার উদ্দিন প্রবাসে থাকায় কথা হয় সাব ঠিকাদার সেলিম উল্লাহর সাথে। তিনি বলেন, কার্যাদেশ অনুযায়ী সঠিকভাবে কাজ করা হচ্ছে। কাজে কোনো অনিয়ম করা হয়নি।
জকিগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্ত মাসুম মিয়া জানান, কয়েকটি বিদ্যালয়ে অনিয়মের অভিযোগে কাজ বন্ধ আর কিছু বিদ্যালয়ে কাজের মান উন্নয়নে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর জকিগঞ্জের উপ সহকারী প্রকৌশলী আজাদ কাজী বলেন, কিছু কিছু বিদ্যালয়ে কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, যা সংশোধনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।