জকিগঞ্জ প্রতিনিধি : কয়েকদিনের অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সীমান্ত নদী কুশিয়ারার পানি সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার আমলসীদ, রারাই, মানিকপুর, মাইজকান্দি, ছয়লেন, কেছরী, লোহারমহল ও মাঝরগ্রাম সহ বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ও উপচে লোকালয়ে ঢুকে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত করে।
একইভাবে গত বছরও পরপর ৩ বার জকিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় কুশিয়ারার পানিতে হাজার হাজার বাড়িঘর বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়।
এছাড়াও বারবার নদী ভাঙ্গনের সম্মুখীন হয়ে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত জকিগঞ্জবাসী বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধান ও নদীভাঙ্গন রোধের দাবিতে এবার সোচ্চার হয়েছেন। দাবি আদায়ে সর্বদলীয়ভাবে জনদাবি পরিষদ গঠন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ জুন) সন্ধ্যায় জকিগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে মতবিনিময় সভা করে জনদাবি পরিষদ। এসময় ৪ দিনের মধ্যে ভাঙ্গনগুলো সংস্কারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না দিলে দুর্বার আন্দোলনের ডাক দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
সভায় জকিগঞ্জে অস্থায়ীভাবে বেড়িবাঁধ সংস্কার ও বাঁধ রক্ষায় আশু পদক্ষেপ গ্রহণ, সুরমা-কুশিয়ারার ভাঙ্গন প্রতিরোধে ব্লক ফেলে নদীর তীর রক্ষা, ভাঙ্গা বেড়িবাঁধের টেকসই নির্মাণ, সুরমা-কুশিয়ারায় ড্রেজিং করে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা এবং বন্যা ও নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করার দাবি জানানো হয়।
সংগঠনের আহবায়ক জকিগঞ্জ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবুল হাসান ও সদস্য সচিব সাবেক পৌর কাউন্সিলর মোস্তাক আহমদ জানান, সারা দেশের নদী ভাঙ্গন আর জকিগঞ্জের নদী ভাঙ্গন এক নয়। এখানে নদী ভাঙ্গনের ফলে দেশের মানচিত্রের পরিবর্তন ঘটে। দেশের মাটি ভারতের দখলের চলে যায়। এভাবে জকিগঞ্জের মানুষ ভিটেমাটি হারা হচ্ছে। বাড়িঘর হারিয়ে হাজার হাজার পরিবার নিঃস্ব। শত-শত একর ফসলি জমি, উপাসনালয়, ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ অনেক জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাট হারিয়ে উপজেলাবাসীকে চরম কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। এ অবস্থায় পানি উন্নয়ন বোর্ড পরির্দশন ছাড়া কার্যকরী কোন প্রদেক্ষেপ নিচ্ছেনা।
জনদাবি পরিষদের নেতৃবৃন্দ জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড সারা বছরই পরিদর্শন করে আর বর্ষার শুরুতেই যেনতেন ভাবে কাজ করে লুটপাটের মহোৎসবে মেতে উঠে; কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না।