বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘আমরা কথা বললে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখায় আর নির্বাচনের কথা বললে আরও বেশি অস্বস্তি প্রকাশ করে। আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করুন- সেটাই ছিল আপনাদের প্রতিশ্রুতি। আমরা নম্রভাবে কথা বললেও সেটিকে দুর্বলতা ভাববেন না। আমাদের বক্তব্য উপেক্ষা করা হলে তার পরিণাম শুভ হবে না।’
তিনি আরও বলেছেন, উপদেষ্টারা যেভাবে অগণতান্ত্রিক ভাষায় কথা বলছেন এবং যেসব সমস্যার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন আমরা সেগুলোর তথ্য দিয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আদালতের রায়ে নির্বাচিত মেয়র ইশরাক হোসেনকে এখনো শপথ নিতে দেওয়া হয়নি। আইন ও গেজেটকে তোয়াক্কা না করে শাসন কেমন চলছে তা আমরা দেখছি। এতে মনে হয়, আমরা যেন কোনো দাসখত দিয়ে দিয়েছি, আপনি যা বলবেন সেটাই পালন করতে হবে। আমরা স্পষ্ট করে বলছি, শপথের ব্যবস্থা করুন, অন্যথায় আন্দোলনের তীব্রতা আরও বাড়বে।’
সোমবার (১৯ মে/৫ বৈশাখ) বিকেলে সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বিএনপির সিলেট বিভাগীয় সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিএনপি দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের প্রহরী হিসেবে কাজ করবে। যদি বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন না করতো তাহলে আজ গণতন্ত্র মুক্ত হতো না। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে সরাসরি রণাঙ্গনে যুদ্ধ করে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন। আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাস সম্পর্কে জনগণ সচেতন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মানেই বাংলাদেশ আর নতুন বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন তারেক রহমান।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি সুশাসনের বাংলাদেশ গড়বে এবং জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনবে। যেসব ব্যক্তি জিয়াউর রহমানের আদর্শে বিশ্বাস করেন না তাদেরকে সদস্যপদ দেওয়া উচিত নয়। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ডিএনএতে গণতন্ত্র নেই। তারা ৫ আগস্টে জনগণের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। শেখ হাসিনার সরকার ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের দায়ে বিতাড়িত হয়েছে; কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের কোনো অনুশোচনা নেই।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ কখনো স্থায়ী হয় না। তাদের পতন অত্যন্ত নির্মমভাবে ঘটে—এটা ইতিহাস প্রমাণ করেছে। আওয়ামী লীগের যারা অপরাধে যুক্ত ছিলেন তাদের বিচার হবেই। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে গণহত্যার বিষয়টি উঠে এসেছে। সকল বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও নির্মম হত্যার বিচার একদিন হবেই।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ এম. রশিদুজ্জামান মিল্লাত বলেন, ‘তারেক রহমান নিজ হাতে ২০ টাকা জমা দিয়ে সদস্য ফরম পূরণের উদ্বোধন করেছিলেন। এটি দলীয় দৃষ্টিকোণে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমাদের এখন সর্বস্তরে সদস্য সংগ্রহে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। যেখানেই আগ্রহী ব্যক্তি পাওয়া যাবে তাদের কাছে ফরম পৌঁছে দিয়ে আন্তরিকভাবে পূরণ করাতে হবে। শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ ছাড়া—কারণ তাদের রাজনৈতিক ডিএনএ-তে সমস্যা রয়েছে। বাকি যারা শহীদ জিয়ার আদর্শে বিশ্বাসী, ভালো ও সজ্জন, তাদেরই সদস্য করতে হবে’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) জি. কে. গউছ। সঞ্চালনায় ছিলেন, কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিমউদ্দিন আহমদ মিলন ও মিফতাহ্ সিদ্দিকী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সিলেট জেলা সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী। অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, আরিফুল হক চৌধুরী ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম. এ. মালিক, কেন্দ্রীয় সহসমবায় বিষয়ক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আখতার, সাবেক সংসদ সদস্য এম. নাসের রহমান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সুজাত মিয়া, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এম. কয়সর আহমেদ, সিলেট মহানগর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েছ লোদী, মৌলভীবাজার জেলা আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন ও হবিগঞ্জ জেলা আহ্বায়ক মিজানুর রহমান।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির হবিগঞ্জ জেলা আহ্বায়ক এনামুল হক, সিলেট জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, সিলেট মহানগর নেতা ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, সুনামগঞ্জ জেলা সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবদুল হক, হবিগঞ্জ জেলা সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবদুর রহিম রিপন ও সৈয়দ আশরাফুন্নবী সহ অসংখ্য নেতাকর্মী।–সংবাদ বিজ্ঞপ্তি