পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেছেন, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য নিরাপদ পরিবেশ সুরক্ষায় নাগরিকদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। নাগরিক অধিকারের পাশাপাশি নাগরিক দায়িত্ব সম্পর্কে সবার জানা প্রয়োজন। সিলেট অঞ্চল প্রাকৃতিক সম্পদের জন্য বিখ্যাত। এখানে অনেক পর্যটন স্পট রয়েছে।
তিনি সিলেটে আগত পর্যটকদের প্রাকৃতিক সম্পদ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি লাঘবের জন্য সামাজিক সংগঠনকে সম্পৃক্ত করে স্পটভিত্তিক কমিটি গঠনের অনুরোধ জানিয়ে আরও বলেছেন, এই কমিটি পর্যটন স্পটের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করবে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল/১৬ বৈশাখ) সকালে সিলেট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় সচিব প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিচ্ছিলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০০২ সালে পলিথিন নিষিদ্ধ করেছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এ মন্ত্রণালয়ের কাজ না হলেও এর অব্যবস্থাপনার জন্য নদী-নালা, খাল-বিল দূষণ ও ভরাট হচ্ছে। এমনকি তা মাইক্রো প্লাস্টিক আকারে মানবদেহে প্রবেশ করে মানুষের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ করছে।
ড. ফারহিনা আহমেদ স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাকে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০২১ যথাযথ প্রতিপালন এবং এ বিষয়ে পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মীদের প্রশিক্ষণের উপর জোর দেন।
সচিব খাস জমি চিহ্নিত করে তা ব্যবহারে সহযোগিতার জন্য জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ জানান।
তিনি বাজার কমিটি ও সরকারি দপ্তরের সমন্বয়ে পলিথিন মুক্ত একটি মডেল বাজারের প্রস্তাবকে স্বাগত জানান এবং এক্ষেত্রে বাজার কমিটিকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পুরস্কৃত করার ঘোষণা দেন।
সচিব বলেন, পরিবেশ সুরক্ষায় আগে নিজেকে পরে সমাজকে বদলাতে হবে।
তিনি সরকারি পর্যায়ে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, সমাজসেবা অধিদপ্তর, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, পাট অধিদপ্তর ও বিআরডিবির মতো দপ্তরকে সম্পৃক্ত করে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিষিদ্ধ পলিথিন সম্পর্কে সচেতন ও পলিথিনের বিকল্প পণ্য বাজারজাতকরণে সহায়তার জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন ও নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধে সরকারি উদ্যোগ ও আইনগত বিধি-নিষেধ নিয়ে বিস্তারিত প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সিদ্ধার্থ শংকর কুন্ডু। বিশেষ অতিথি ছিলেন, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক ও রাজস্ব) দেবজিৎ সিংহ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার, পর্যটন পুলিশের প্রতিনিধি, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি-বেলার বিভাগীয় সমন্বয়ক, নিরাপদ খাদ্য অফিসার, কৃষি বিপনন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, মৎস্য অফিসার, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি, বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির প্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি।–পিআইডি সিলেট