সংবাদ সম্মেলন সম্পর্কে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা

No Image Available
  • আপডেট টাইম : April 24 2025, 16:10
  • 6 বার পঠিত
সংবাদ সম্মেলন সম্পর্কে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক : সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস জেলা সদরের কাছাকাছি নেওয়া সহ বিভিন্ন দাবিতে বুধবার (২৩ এপ্রিল) সুনামগঞ্জে আহুত সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য সম্পর্কে সুবিপ্রবিরি রেজিস্ট্রার (অ.দা) প্রকৌশলী মো সারফুদ্দিন একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
ব্যাখ্যাটি হুবহু প্রকাশ করা হলো : গত ২৩/০৪/২০২৫ খ্রি তারিখে বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থানান্তর আন্দোলন নামক একটি প্লাটফর্ম এর আহবায়ক অ্যাডভোকেট হুমায়ন মঞ্জুর চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সুনামগঞ্জের কয়েকটি উপজেলার অধিকাংশ সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ অত্যান্ত চমৎকারভাবে তাদের দাবী দাওয়া উপস্থাপন করেন। যার মধ্যে একজন সম্মানিত ব্যক্তি কিছু অসত্য ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য উপস্থাপনা করেছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। অভিযোগগুলো খণ্ডন এবং জনসাধারনের মধ্যে বিভ্রান্তি দূর করতে নিম্নে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রকৃত সত্য ঘটনা তুলে ধরার প্রয়োজন মনে করছে। কারণ, এ ধরনের অসত্য, বিভ্রান্তি মুলক ও ভুল তথ্যে পরিপূর্ণ বিবৃতি আমাদের সম্মানিত ভিসি মহোদয় ও বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের জন্য অসম্মানজনক ও মানহানীকর। তিনি শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বদ্যিালয়ের একজন স্বনামধন্য,খ্যাতিমান, প্রতিথযশা অধ্যাপক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের গবেষক এবং কঠোর পরিশ্রমী ব্যাক্তিত্ব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ছাত্রী নিবাস সম্পর্কিত অভিযোগ প্রসঙ্গে জানানো যাচ্ছে যে, বর্তমান উপাচার্য মহোদয় অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করার আগে থেকেই ছাত্রী নিবাসটি বিনা ভাড়ায় চালু রয়েছে। উনি যোগদানের পর জানতে পারেন যে. ছাত্রীরা সাবেক মন্ত্রীর বাড়ির একটি খালি অংশে বসবাস করছে। তিনি সিনিয়র শিক্ষক ও কর্মকর্তাবৃন্দ সহযোগে সরেজমীনে বিষয়টি তদন্ত করেন এবং ছাত্রীদের সাক্ষাৎকার নেন। সাবেক পতিত সরকারের সাথে সকল সংশ্লিষ্টতা ত্যাগ করার জন্য তাৎক্ষনিকভাবে ছাত্রী নিবাস স্থানান্তর পক্রিয়া শুরু করার নির্দেশনা প্রদান করেন। যাহা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন ও বাজেট প্রাপ্তি সাপেক্ষে দ্রুত বাস্তবায়ন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
শান্তিগঞ্জের এলাকায় বাসা-বাড়ি/স্থাপনা ভাড়া নিতে গিয়ে সরকারের অতিরিক্ত টাকা ব্যয় দেখিয়ে অর্থের নয়-ছয় করা হচ্ছে এবং ভিসি ও তাঁর প্রশাসন অনিয়মের জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে, পূর্ববর্তী ভিসি ০৩টি ভবন ভাড়া নেয়। যার মধ্যে ০১টি জি টু জি, অন্য ০২টি ব্যক্তি মালিকানাধীন। বর্তমান ভিসি মহোদয় ক্লাস ও ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসনের বিষয়টি প্রক্রিয়াকরণের অংশ হিসেবে ইউজিসি এর কাছে উপস্থাপন করেছেন মাত্র; কোন ভবন ভাড়া গ্রহণ করেনি, বরং তাঁর প্রচেষ্ঠায় স্থানীয় ০২টি প্রতিষ্ঠানের অব্যবহৃত ০৩টি বড় অংশ বিনা ভাড়ায় ব্যবহার করার চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমান ভিসি মহোদয় যেখানে ১টি ভবন পর্যন্ত ভাড়া নেননি, এমনকি অদ্যবধি সরকারের অনুমোদন সংক্রান্ত কোন পত্রও পাওয়া যায়নি, সেখান এসব কাজের অনিয়ম বা নয় ছয় করার প্রশ্নই আসে না। এসব অসত্য বক্তব্য কেবল জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ায় এবং বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার নিরলস প্রচেষ্ঠায় বিঘ্ন ঘটায়। অভিযোগকারীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, বর্তমান ভিসি যোগদানের পর থেকে অদ্যবধি কোন পদে নিয়োগও প্রদান করেননি।
নতুন সিন্ডিকেট গঠনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও সরকারের বিধি-বিধান প্রযোজ্য। এক্ষেত্রে ভিসি মহোদয়ের একক ইচ্ছায় নতুনভাবে সিন্ডিকেট গঠনের সুযোগ নেই। যেসব পদ গুলোতে মনোনয়নকৃত সদস্যগনের মেয়াদ শেষ হয়েছে, সেসব পদে পূনঃমনোনয়ন দেবার জন্য মাননীয় আচার্যের (মহামান্য রাষ্ট্রপতি) কার্যালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/ বিভাগ ও কমিশনকে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে ইউজিসি ও অর্থ মন্ত্রণালয় তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করে প্ত্র প্রেরণ করেছে। অন্যান্য পদগুলোর মনোনয়ন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর বিবেচনাধীন। স্মর্তব্য যে, ০২টি মাত্র ক্যাটাগরিতে প্রতি পদের বিপরীতে ০৩ জনের নামের প্রস্তাব প্রেরণের নিয়ম প্রচলিত রয়েছে, যাহা এখনো প্রেরিত হয়নি। প্রস্তাব প্রেরণের পর মাননীয় আচার্য ও মন্ত্রণালয় তাদের নিজেস্ব বিবেচনায় যে কাউকে মনোনয়ন দিয়ে থাকেন। কাজেই স্পষ্টত প্রমাণিত হয় যে, ভিসি মহোদয় তড়িঘড়ি করে নিজের আজ্ঞাবহদের নিয়ে সিন্ডিকেট মেম্বারদের তালিকা করার অপতৎপরতার বিষয়টিও মন গড়া এবং বাস্তবতা বিবর্জিত।
প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে যে, একই দিন পূর্ব নির্ধারিত স্থানে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পক্ষে সিলেট কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারে শান্তিগঞ্জ সমিতি, সিলেটের উদ্যোগে ব্যাংকার জনাব মো: কবিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সমিতির সদস্য সচিব শিক্ষানুরাগী এমদাদুল হক স্বপনের পরিচালনায় কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি ও সিলেট মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খালেদ আহমদ। সেখানে শান্তিগঞ্জ, জগন্নাথপুর, ছাতক এলাকা ছাড়াও সিলেট শহরের সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য রাখেন। তাঁরা সকলেই পূর্ব নির্ধারিত স্থানে সুবিপ্রবি ক্যাম্পাস স্থাপনের দাবি করেন।
উপরোক্ত ২টি মুভমেন্ট এবং সাম্প্রতিককালে স্থায়ী ক্যাম্পাসের জায়গার ব্যপারে অনুষ্ঠিত অন্যান্য পাবলিক মুভমেন্ট থেকে সুস্পষ্টভাবে দেখা যায় যে, সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলার কিছু সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ সুবিপ্রবির ক্যাম্পাস স্থাপন নিয়ে পরস্পর বিরোধী সংবাদ সম্মেলন ও মানব বন্দন আয়োজন করে আসছেন। এক্ষেত্রে সুবিপ্রবির প্রশাসনের বিন্দুমাত্র সংশ্লিষ্টতা নেই। ক্যাম্পাস যেস্থানেই হোক না কেন, তা বিবেচনার বাইরে রেখে প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় তথা জাতীয় স্বার্থে কাজ করছে এবং করবে। বিশ্ববিদ্যালয় স্থান নির্ধারণ একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় এটা কেবল সরকারই সিদ্ধান্ত নিবেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেবল সরকারের সিদ্ধান্তের আলোকেই কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।
সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে এই ধরনের অসত্য, কল্পনা প্রসূত, অতিরঞ্জিত ও বাস্তবতা বিবর্জিত বানোয়াট সংবাদ প্রচার করা থেকে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। একই সঙ্গে মাননীয় উপাচার্য আসন্ন অতিব জরুরি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের ভর্তি পরীক্ষা (২৫-০৪-২০২৫, ০২-০৫-২০২৫ এবং ০৯-০৫-২০২৫ খ্রি.) সফলভাবে সম্পন্ন করার নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট সকল মহলের সহযোগিতা কামনা করেন।

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর