রাগীব আলীর অবৈধ দখল মুক্ত তারাপুর চা বাগানে প্রথম গণহত্যা দিবস পালন

প্রকাশিত April 18, 2017
রাগীব আলীর অবৈধ দখল মুক্ত তারাপুর চা বাগানে প্রথম গণহত্যা দিবস পালন

নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেটে রাগীব আলীর অবৈধ দখল থেকে মুক্ত হবার পর এবারই প্রথম তারাপুর চা বাগান গণহত্যা দিবস পালিত হলো।
এ উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে তারাপুর চা বাগান স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন ও স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে জেলা প্রশাসন, শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ ও উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী।
পরে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার। বিশেষ অতিথি ছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা কমান্ডার সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল, মহানগর কমান্ডার ভবতোষ রায় বর্মন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক দেবজিৎ সিংহ ও মদন মোহন কলেজের অধ্যক্ষ ড আবুল ফতেহ ফাত্তাহ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শহীদ পরিবারের সন্তান পংকজ গুপ্ত।
স্মরণসভা থেকে তারাপুর চা বাগান গণহত্যায় শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়ার দাবি জানানো হয়।
পরে প্রত্যেক শহীদের স্বজনকে সম্মাননা পদক দেয়া হয়।
১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল সকাল ১১টার দিকে পাকিস্তানি হানাদার সেনা ও তাদের দোসররা তারাপুর চা বাগানের মালিক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক মিলিয়ে ৪৩ জনকে পরিচয়পত্র দেয়ার কথা বলে নিয়ে যায়। পরে পার্শ্ববর্তী মালনীছড়া চা বাগানে লাইন ধরিয়ে হত্যা করে ৩৯ জনকে। অন্যরা আহত হয়ে বেঁচে যান। এ অবস্থায়ই একজন এসে খবর দেন সেই নৃশংসতার। ফলে জীবন বাঁচাতে শহীদ পরিবারের সদস্য সহ সবাই যে যেদিকে পারন পালিয়ে যান। ফলে মরেদহগুলোর সৎকার সম্ভব হয়নি।
এই হত্যাযজ্ঞে তারাপুর চা বাগান মালিক পরিবারের পাঁচ সদস্য শহীদ হন। তবে বেঁচে যান অপ্রাপ্ত বয়স্ক পংকজ গুপ্ত। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি শহীদদের স্মরণে গড়ে তুলেন একটি স্মৃতিসৌধ। সেখানে প্রতিবছর ১৮ এপ্রিল শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হতো; কিন্তু রাগীব আলী জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে ১৯৯০ সালে তারাপুর চা বাগান দখল করে নিলে পরবর্তী প্রায় ২৬ বছর তাতে কেউ শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারেননি।
তবে শেষ পর্যন্ত আইনি লড়াইয়ে জিতে পংকজ গুপ্ত তারাপুর চা বাগানের মালিকানা ফিরে পেয়েছেন।